Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

দাম শব্দটি যেভাবে আমাদের হলো (The way the word `Daam' came to us)

হাজার বছরের ভাষা বাংলা। রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কারণে বাংলাদেশে আগত বিভিন্ন ভাষা ভাষী মানুষের নিকট হতে বহু শব্দ বাংলায় স্থান করে নিয়েছে। পরবর্তীতে বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে কালের বিবর্তনে সে সব শব্দ আজ বাংলা ভাষার নিজের হয়ে গেছে । তবে ব্যুৎপত্তি বিশ্লেষণে সে সব শব্দকে তার মূল পরিচয়েই চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তেমনি আমাদের প্রতিদিনের ববহৃত একটি শব্দ হচ্ছে ‘দাম’। যার অর্থ মূল্য হিসেবে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দাম’শব্দটি বাংলায় এসেছে গ্রিক ভাষা থেকে যার ব্যবহূত অর্থ এক রকম মুদ্রা। 

মহাবীর আলেকজান্ডারের আমলে গ্রিকদের এক প্রকার রৌপ্য মুদ্রার নাম ছিল দ্রাখমে। আলেকজান্ডার ভারত আসার পর উত্তর-পশ্চিম ভারতের বিশাল একটা এলাকা গ্রিক বা যবনদের দখলে চলে যায়। তারা দীর্ঘদিন ওই এলাকা শাসনও করে। তখন দ্রাখমে দিয়েও দ্রব্যাদির মূল্য পরিশোধ করা যেত। 


‘দ্রাখমে’ শব্দটির বানান ও উচ্চারণ কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে সংস্কৃতে ‘দ্রম্য’-রূপ ধারণ করে। এ ‘দ্রম্য’ শব্দ থেকে প্রাকৃত হিসেবে আসে ‘দম্ম’। দম্মের প্রাকৃত রূপের মধ্য দিয়ে আমরা পাই ‘দাম’। যার অর্থ মূল্য। আবার ‘দর’ শব্দের অর্থও মূল্য। ‘দাম’ শব্দের পূর্বে ‘দর’ যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে ‘দরদাম’। গ্রিক ভাষা হতে আগত ‘দাম’ এখন সংস্কৃত ‘মূল্য’ শব্দের চেয়ে অধিক জনপ্রিয়।

রুপান্তর প্রক্রিয়াঃ

দ্রাখ্মে (গ্রিক) - দ্রম্য (সংস্কৃত) > দম্মে (প্রাকৃত) > দাম (বাংলা)

ব্যাখাঃ

'দাম' শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ 'দ্রাখ্মে' থেকে।

প্রথমে 'দ্রাখ্মে' শব্দটি রূপান্তরিত হয়েছে সংস্কৃত 'দ্রম্য' শব্দে।

আবার 'দ্রম্য' শব্দটি রূপান্তরিত হয়েছে প্রাকৃত ভাষার 'দম্ম' শব্দে।

অবশেষে 'দম্ম' থেকে এসেছে বাংলা ভাষায় 'দাম'।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ