ব্যাংকারদের জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি প্রফেশনাল কোর্স। ব্যাংকিং ডিপ্লোমার জন্য পদোন্নতিতে আলাদা নাম্বার বরাদ্দ থাকে। এমনও দেখা যায়, ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাশের সার্টিফিকেট না থাকার কারণে অনেকের পদোন্নতি আটকে গেছে। আসুন জেনে নেয়া যাক ব্যাংকিং ডিপ্লোমার খুটিনাটি।
ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা কী?
ব্যাংকিং ডিপ্লোমা হচ্ছে এমন একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে একজন ব্যাংকারের ব্যাংকিং জ্ঞান এবং তার বাস্তব প্রয়োগ সম্পর্কে একজন ব্যাংকার কতটুকু ধারনা রাখেন তা যাচাই করার কৌশল। প্রতি বছর সাধারনত জুন ও ডিসেম্বরে দু’বার এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকিং ডিপ্লোমার জন্য দুই পার্টে (ধাপ) ৬+৬=১২টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ পরীক্ষার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হচ্ছে ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি)।
কী কী বিষয়ে পরীক্ষা হয়?
ব্যাংকিং ডিপ্লোমার জন্য দুই পার্ট বা ধাপে (১ম ধাপ জেএআইবিবি ও ২য় ধাপ ডিএআইবিবি) ৬টি করে মোট ১২টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেমন-
জেএআইবিবির বিষয়সমূহঃ
1. Principles of Economies and Bangladesh Economy
2. Business Communication
3. Organization and Management
4. Laws and Practice of Banking
5. Accounting for Financial Services
6. Marketing of Financial Services
ডিএআইবিবির আবশ্যিক বিষয় (৫টি)
1. Management of Financial Institutions
2. Lending Operations and Risk Management
3. International Trade and Foreign Exchange
4. Information Technology in
Financial
5. Management Accounting
ডিএআইবিবির ঐচ্ছিক বিষয় (যে কোন ১টি)
1. Central
Banking and Monetary Policy
2. Agriculture
and Microfinance
3. SME
and Consumer Banking
4. Islamic
Banking
5. Investment
Banking and Lease Financing
6. Treasury
Management
নাম্বার বন্টনঃ
প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নাম¦ারের পরীক্ষা হয়ে থাকে। পরীক্ষার পাশ নাম্বার ১০০ এর মধ্যে ৫০। এখানে কোন বিভাগ/ শ্রেণী/ গ্রেডিং নেই। শুধু পাশ আর ফেল। তবে, কোনো বিষয়ে অনন্য কৃতিত্ব দেখাতে পারলে তার জন্য রয়েছে পুরস্কারের ব্যবস্থা। এছাড়া, সব ব্যাংকেই ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পাস করলে রয়েছে এককালীন আর্থিক পুরস্কার।
পরীক্ষা পদ্ধতিঃ
আইবিবি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা ও নিবন্ধনের তারিখ ঘোষণা করে থাকে। প্রতিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়েও পরীক্ষার নোটিশ প্রেরণ করা হয়। আইবিবির ওয়েবসাইটে পরীক্ষার আবেদনের ফরম পাওয়া যায়। প্রথমবার পরীক্ষা দিতে গেলে একটি এনরোলমেন্ট নাম্বার প্রয়োজন হয়, যা আইবিবি হতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পরীক্ষায় রোল নাম্বার পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু এনরোলমেন্ট নাম্বার সারা জীবনের জন্য একটাই। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ফি ১৫০০ টাকা। পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দিয়ে চাকরিরত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার সকাল ও বিকেল।
প্রস্তুতি নেবেন কিভাবে?
মনে রাখবেন, ব্যাংকিং ডিপ্লোমা কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নয়। এটি একটি প্রফেশনাল কোর্স এবং এ পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরা সবাই বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরত। ফলে চাকুরির পাশাপাশি এ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া একটু কঠিন। তবে, পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কমপক্ষে দুই মাস সময় পাওয়া যায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য। প্রথমে সিলেবাসটি সংগ্রহ করে নিন। সিলেবাসের বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি পরিস্কার ধারণা নিন। ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার জন্য বাজারে অনেক সহায়ক বই পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও অনেক তথ্য পেতে পারেন। সেখান থেকে বিভিন্ন তথ্যসংবলিত গুরুত্বপূর্ণ সহায়িকা সংগ্রহ করতে পারেন। বিগত সালের প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করুন। সিলেবাস ও বিগত বছরের প্রশ্নের আলোকে সাজেশন তৈরি করে নিন। বিগত সালের প্রশ্ন সমাধান করতে পারলেই ৬০-৭০ শতাংশ প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যায়। প্রশ্ন অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্লেষনধর্মী হয় বিধায় সিলেবাসের আলোকে তৈরি করা সাজেশনের প্রশ্নের উত্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা নিন। প্র্শ্ন অনুযায়ী পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখুন। কোনো প্রশ্নের উত্তর ছেড়ে আসা চলবে না। ভুল উত্তর করা যাবে না। পাশ করে যাবেন ইনশাল্লাহ। অনেকেই অনেকবার পরীক্ষা দিয়েও সব বিষয়ে পাস করতে পারেন না। এতে হতাশ হবেন না।
0 মন্তব্যসমূহ